| বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 156 বার পঠিত
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলের পাশাপাশি ৩৩ জন সিনেটরের ভাগ্যও নির্ধারিত হচ্ছে। এর মধ্যে, বে ডেলাওয়্যার রাজ্য থেকে সারাহ ম্যাকব্রাইড বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে কংগ্রেসে নির্বাচিত হয়েছেন, তিনি হলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রূপান্তরকামী সদস্য। তার এ জয় একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বিশেষ করে এমন সময় যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প রূপান্তরকামীদের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ করেছিলেন। খবর ডেয়েচে ভেলে ও এনডিটিভির।
গোটা পৃথিবীর চোখ এখন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। কে হবে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট, ডোনাল্ড ট্রাম্প, না কি কমলা হ্যারিস? লড়াই চলছে হাড্ডাহাড্ডি। তবে যিনিই নির্বাচিত হবেন, তার ক্ষমতা নির্ধারিত হবে সিনেট এবং কংগ্রেসে তাদের পক্ষে কত ভোট আছে তার ওপরে। অনেক সময়েই দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট যে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন, সিনেট এবং কংগ্রেস তা আটকে দিচ্ছে। ফলে সিনেট এবং কংগ্রেসের নির্বাচন প্রক্রিয়াও গুরুত্বপূর্ণ।
বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্বাচনের পাশাপাশি ভাগ্য নির্ধারিত হচ্ছে হাউস অব রিপ্রেসেনটেটিভের ৩৩ জন সিনেটরের। এই ৩৩ জন সিনেটরের ওপর নির্ভর করবে হাউসে রিপাবলিকানদের পাল্লা ভারী হবে, না কি ডেমোক্র্যাটদের।
প্রাথমিক ভোট গণনার পর একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেছে। সিনেট এবং কংগ্রেস দুই জায়গাতেই রিপাবলিকানরা ডেমোক্র্যাটদের থেকে অনেকটা এগিয়ে আছে। সিনেটে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২। রিপাবলিকানদের সংখ্যা সেখানে ৫১। হাউসে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যা ১৬৩। রিপাবলিকান ১৮৭।
বে ডেলাওয়্যার রাজ্য থেকে বিপুল ভোট জয়ী হয়ে কংগ্রেসের সদস্য হচ্ছেন প্রথম রূপান্তরকামী ব্যক্তি সারাহ। রাজ্যবাসীকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বস্তুত, ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনি প্রচারে রূপান্তরকামীদের সরাসরি আক্রমণ করেছিলেন। তারপরেও তার এই জয় নিঃসন্দেহে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
সিনেটে নির্বাচনের পদ্ধতি
প্রতি দুবছরে হাউসের মেম্বাররা নির্বাচিত হন। ২০২২ সালে শেষ মধ্যবর্তী নির্বাচন হয়েছিল। সে সময় হাউসে ডেমোক্র্যাটেরা রিপাবলিকানদের থেকে সংখ্যায় সামান্য বেশি ছিলেন।
মার্কিন সেনেটে প্রতিটি রাজ্য থেকে দুই জন করে প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। রাজ্যের আয়তন যত বড় বা ছোটই হোক না কেন! ১০০ জন সিনেটর ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন। তবে এই সিনেটরদের মধ্যে আবার তিন রকমের ভাগ থাকে। এক-তৃতীয়াংশ সিনেটরকে দুই বছর পর পর নির্বাচনে লড়তে হয়। এবছর যারা ভোটে লড়ছেন, তারা প্রথম শ্রেণির সেনেটর। ২০১৮ সালে ট্রাম্পের রাজত্বে তারা নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে এই ৩৩ জন সিনেটরেরও নির্বাচন হচ্ছে। এবং তাদের ওপর নির্ভর করবে সিনেটে কোন দল শক্তিশালী হবে। ফলাফলের ট্রেন্ড বলছে, সিনেটে রিপাবলিকানদেরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে।
মার্কিন সংবিধানে সিনেট এবং হাউসের নির্বাচনে এই বৈচিত্র রাখা হয়েছে একটাই কারণে, ক্ষমতা যাতে কেন্দ্রিভূত না হয়। বিরোধীদের শক্তিও যাতে অটুট থাকে হাউসে। বিভিন্ন সময় ছোট ছোট করে এই নির্বাচনগুলি হওয়ার ফলে প্রেসিডেন্ট একচেটিয়া ক্ষমতা ভোগ করতে পারেন না। অনেক সময়েই দেখা যায়, যে দলের প্রেসিডেন্ট তার বিপক্ষ দলের প্রতিনিধিদের সংখ্যা কংগ্রেসে বেশি। আবার সেনেট এবং কংগ্রেসের মধ্যেও এই বৈচিত্র দেখা যায়। ফলে কোনো সিদ্ধান্তই এক তরফা নেওয়া যায় না।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, গত চার বছরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একাধিকবার অস্ত্র আইন সংস্কারের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু হাউসের বিরোধিতায় শেষ পর্যন্ত তা তিনি করতে পারেননি। খেয়াল রাখতে হবে, হাউসে রিপাবলিকানদের প্রতিনিধিত্ব বেশি থাকার কারণেই এই সিদ্ধান্ত পাশ হয়নি। অতীতে এমন আরও অসংখ্য উদাহরণ আছে।
এদিন যে ৩৩টি আসনের ফলাফল জানা যাবে, তার মধ্যে ১৯টি আসন ছিল ডেমোক্র্যাটদের দখলে। চারটি আসন ছিল নির্দল প্রার্থীদের কাছে। এই নির্দল প্রার্থীরা অধিকাংশ সিদ্ধান্তেই ডেমোক্র্যাটদের পাশে ছিলেন। অনেকেই মনে করছেন, এই ১৯টি আসন ডেমোক্র্যাটেরা ধরে নাও রাখতে পারেন। আসন কমতে পারে নির্দল প্রার্থীদেরও। সে ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারে রিপাবলিকানরা।
Posted ৯:৪১ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪
manchitronews.com | Staff Reporter