বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কোনো খারাপ পরিণতি হলে দেশে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তারা বলেছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে সরকার তাকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না। তার কোনো খারাপ পরিণতি হলে সরকারকেই দায় নিতে হবে।মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত ‘একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা, সম্ভাব্য বিপর্যয় ও জনগণের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার নির্বাচন পর্যন্ত যেতে পারবে না। তারা তফসিল ঘোষণা করতে পারবে না। দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ লড়াই ছাড়বে না। এখানে কোনো আপসের সুযোগ নেই।বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, খালেদা জিয়ার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে তার দায় আওয়ামী লীগ কোনোভাবে এড়াতে পারবে না। এ বিষয়ে তাদের পরিষ্কার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এটা তারা না করলে প্রতিহিংসার রাজনীতির দেয়াল আরও বাড়তে থাকবে। ফলে একটি গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিরোধীদলকে মোকাবিলা করতে আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি নেই। তাদের নৈতিক, রাজনৈতিক পরাজয় হয়েছে। দল হিসেবে তাদের যে মৃত্যু ঘটেছে তা ওবায়দুল কাদের ও তথ্যমন্ত্রীর গত ৩ মাসের কথায় স্পষ্ট। তিনি আরও বলেন, বিদেশ সফর শেষে দেশে এসে তলে তলে আপসের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেননি। সংবাদ সম্মেলনে তার যে রাগ, ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে তাতে এই সফর যে কোনো কাজে লাগেনি, সেটা বোঝা গেছে। তাদের অধীনে আগামী নির্বাচন হবে সেটাও তারা জোর দিয়ে বলতে পারছে না।
সরকারের উদ্দেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, তফসিল ঘোষণার পায়তারা থেকে বের হয়ে সংসদের শেষ অধিবেশনে নির্দলীয় সরকারের বিধান করে সম্মানে বিদায় নিতে পারেন। সবকিছু উপেক্ষা করে যদি একতরফা নির্বাচনের পথে যান, তাহলে বাংলাদেশের জনগণ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নামবে।তিনি আরও বলেন, রিজার্ভ-রেমিট্যান্স কমছে, অর্থ পাচার বাড়ছে, সাধারণ মানুষের ওপর ভয়ংকর চাপ নেমে আসছে, মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। অর্থনৈতিক বিপর্যয় হলে সব ক্ষেত্রেই বিপর্যয় নেমে আসবে। এই সরকার যেহেতু ইতিবাচক পথে হাঁটবে না, তাই জনগণকে সংগ্রাম করেই এগোতে হবে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সহসভাপতি তানিয়া রব, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমসহ অন্যরা।