| সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 81 বার পঠিত
যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা ছাড়িয়ে বাংলাদেশে ‘করোনা হিরো’ হওয়া নিউইয়র্কের ডা. ফেরদৌস খন্দকারের ‘চিকিৎসা লাইসেন্স’ (সনদ) কেড়ে নেওয়া হয়েছে। গত জুলাই মাসে চিকিৎসার নামে রোগীর শ্লীলতাহানি এবং যৌন-উত্তেজক কথাবার্তায় অতিষ্ঠ কয়েকজন তরুণীর দায়ের করা মামলার জ্যাকসন হাইটসের এই চিকিৎসক জীবনে আর এ পেশায় না থাকার মুচলেকা দিয়েছেন।
এদিকে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে নিউইয়র্ক স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ’র বোর্ড অব প্রফেশনাল মেডিকেল কনডাক্ট (বিপিএমসি) গত ২৪ জুলাই নির্দেশনা জারি করেছে। যা ১৫ অক্টোবর কার্যকর হয়। অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণে সক্ষম হবেন না বলে ৩৭ এভিনিউ থেকে ব্রডওয়েতে স্থানান্তরিত এই চিকিৎসক স্বীকার করেছেন তার মুচলেকানামায়।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার দেবিদ্বারের সন্তান ফেরদৌস খন্দকার ২০০২ সালের ২১ জুন থেকে নিউইয়র্কে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। এ সময়ে তিনি অকারণে রোগীর সাথে অনৈতিক আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ উল্লেখ করা হয়। কুইন্সের ৫ তরুণী কর্তৃক কুইন্স সুপ্রিম কোর্টে দায়েরকৃত এই মামলায় ডা. ফেরদৌস খন্দকারের লাম্পট্যের ধারাবিবরণী উপস্থাপিত হয়- যা সে সময় নিউইয়র্কের মূলধারার বেশ কয়েকটি পত্রিকায় ফলাও করে ছাপা হয়েছিল।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বেশ বছর থেকেই ফেরদৌস খন্দকার তাদের বুকে, নিতম্বে এবং গোপনাঙ্গে স্পর্শ করেছেন। এমনকি কারও কারও কাপড় সরিয়ে বুকে হাত দেয়াও বাদ দেননি। তাদের বয়স তখন ১৪ বছরের কম হওয়ায় বিব্রত ছিলেন বলে সরাসরি অভিযোগ করতে পারেননি। সামাজিক লোকলজ্জার কারণেও এসব শিশুর অভিভাবকরা সবকিছু চেপেও রেখেছিলেন।
ফেরদৌস খন্দকারের নিষ্ঠুর এবং অপেশাদার আচরণের ভিকটিমরা এখন প্রাপ্তবয়স্ক এবং পরিণত বয়সে সেসব দুষ্কর্মের বিচার চাইছেন। যাতে আর কেউ এমন হিংস্রতার ভিকটিম না হয়। তবে, এই মামলা দায়েরের পর ফেরদৌস খন্দকার উল্টো অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন।
এরপর তরুণীসহ আরও অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেরদৌস খন্দকারের অসভ্য আচরণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তার কঠোর শাস্তির দাবি জানান। ২৩ বছর বয়সি এক যুবতী মামলায় অভিযোগ করেন, তিনি ফেরদৌস খন্দকারের কাছে গিয়েছিলেন রক্ত পরীক্ষার জন্য। এরপর তাকে ফেরদৌস খন্দকারের খাস কামরায় নেওয়া হয়।
জানানো হয়, রক্ত পরীক্ষার আগে তার সারা শরীর পরীক্ষা করতে হবে। সেখানে ওই যুবতীর কাপড় খুলতে বলা হয়। এতে বিব্রত ওই যুবতী বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেও সক্ষম হননি। এরপর খোলা বুকে স্টেথোস্কোপ রেখে পরীক্ষার নামে তামাশা করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। শুধু তাই নয়, ২৪ বছর বয়সি অন্য এক যুবতী উল্লেখ করেন, ফেরদৌস খন্দকার তার বুকের কাপড় সরিয়ে শ্লীলতাহানি করেছেন।
প্রবাসীরা বলছেন, তিনি শাস্তি থেকে বাঁচতে চিকিৎসা পেশা থেকে চিরতরে সরে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তর তার লাইসেন্স কেড়ে নিয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রোগীর সাথে অসভ্য আচরণের অভিযোগ স্বীকার করে লাইসেন্স খোয়ানোর মধ্যেই দায়েরকৃত মামলার অবসান ঘটছে না। মামলাটি এখন আরও জোরেশোরে চালু হবে। সাক্ষী-প্রমাণে দোষী সাব্যস্ত হলে চড়া মাসুল দিতে হবে সাবেক এই চিকিৎসককে।
Posted ৪:২০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪
manchitronews.com | Staff Reporter