



| শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | প্রিন্ট | 299 বার পঠিত

সংগৃহীত ছবি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগলা’র দেহবাশেষ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দিয়েছে তৌহিদী জনতা। এর আগে, সেখানকার দরবার শরিফে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জুমার পর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জুড়ান মোল্লাপাড়ায় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ইউএনওর গাড়ি, পুলিশের দুটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার কামরুল ইসলামসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব এসব তথ্য দিয়েছেন।
তৌহিদী জনতার একজন আল-আমিন বলেন, “নুরাল পাগলা একটা সময় (আশির দশকের মাঝামাঝি) নিজেকে ইমাম মাহাদী দাবি করতেন। তার কর্মকাণ্ড ছিল শরিয়তবিরোধী। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এসব মেনে নিতে পারেনি। যে কারণে জনতা আজ নুরাল পাগলের দরবার শরিফ ভেঙে দিয়েছে। সেই সঙ্গে তার লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে ফেলেছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২৩ আগস্ট ভোরে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হয় নুরুল হকের। ওই দিন রাতে ভক্তদের অংশগ্রহণে জানাজার পর মাটি থেকে কয়েক ফুটে উঁচুতে বিশেষভাবে তাকে কবর দেওয়া হয়। কবরের চারপাশে দেওয়াল তুলে পবিত্র কাবা শরিফের আদলে রঙ করা হয়।
এরপর থেকে কবর নিচু, রঙ পরিবর্তন ও ইমাম মাহাদীর দরবার শরিফ লেখা সাইনবোর্ড অপসারণের দাবি তুলে তৌহিদী জনতা বিক্ষোভ করে আসছিল। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে উভয় পক্ষকে নিয়ে একটি সভাও হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি সমাধানে একটি কমিটি গঠন করে। কবরের ব্যাপারে প্রশাসন নুরুল হকের পরিবারের সঙ্গে কথাও বলে। পরিবার বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় নিয়েছিল। দরবার শরিফের দেয়ালের বৃহস্পতিবার নতুন রঙ করে বিতর্কিত রঙ বদলে ফেলা হয়। তবে তাতেও ক্ষোভ থেকে রক্ষা হয়নি। শুক্রবার সেখানে হামলা হলো। এর আগে, গত মঙ্গলবার নুরুল হকের কয়েক ফুট উঁচুতে কবর দেওয়াকে ‘শরিয়ত পরিপন্থি’ দাবি করে বিক্ষোভের ঘোষণা দেয় উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি।
সংগঠনটির নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে নুরুল হকের আস্তানায় অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির সভাপতি মাওলানা জালাল উদ্দিন প্রামাণিক। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী জুমার পর আনসার ক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি।
কর্মসূচিতে একদল লোক শাবল, হাঁতুড়ি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হাজির হয়। এ সময় উপস্থিত আলেম–ওলামা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও ওই লোকজন মিছিল নিয়ে নুরুল হকের বাড়ির দিকে রওনা হয়। এদিকে, নুরুল হকের দেহাবশেষে আগুন দেওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে।

Posted ৫:১২ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
manchitronews.com | Staff Reporter


