শনিবার ৯ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুত্রবধূকে নিয়ে পতেঙ্গায় শ্বশুরের কাটা মাথার সন্ধানে পিবিআই

  |   সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   218 বার পঠিত

পুত্রবধূকে নিয়ে পতেঙ্গায় শ্বশুরের কাটা মাথার সন্ধানে পিবিআই

প্রতীকি ছবি

চট্টগ্রামে বাবাকে হত্যার পর শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন মাথার খোঁজে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় নিহতের ছোট পুত্রবধূকে নিয়ে দিনভর তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পুত্রবধূর দেখানো স্থানে তল্লাশি চালালেও সেই মাথার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে শ্বশুরকে হত্যা ও দেহ খণ্ডবিখণ্ড করার কাজে ব্যবহার করা ধারাল অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে।

পিবিআই কর্মকর্তা জানিয়েছেন গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে থাকা নিহত ব্যক্তির পুত্রবধূ আনারকলির দেওয়া তথ্য মতে রবিবার সকালে তল্লাশি চালাতে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে যায় পিবিআই টিম।জোয়ারের কারণে ফিরে এলেও বিকেলে ফের গিয়ে তল্লাশি চালানো হয়।

নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খাঁন জানান, পতেঙ্গায় টানেলের প্রবেশমুখে পুলিশ বক্সের পেছনে পাথরের ব্লকের ভেতরে খণ্ডিত মাথাটি আছে বলে আনারকলি আমাদের দেখিয়ে দেন। কয়েক ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়েছি। সেখানে লাশ পচা দুর্গন্ধ পেয়েছি, কিন্তু জোয়ার চলে আসার কারণে মাথাটি পাওয়া যায়নি।
ধারণা করছি ব্লকের ভেতরে মাথাটি এখনো আটকে আছে। আজ সোমবার সকালে ভাটার সময় আবারও তল্লাশি চালানো হবে।মো. হাসান (৬১) নামের এক ব্যক্তি স্ত্রী ও ছেলেদের হাতে খুন হন। তিনি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়ার বড়ইতলী গ্রামের সাহাব মিয়ার ছেলে।গত ২১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নগরীর পতেঙ্গা বোট ক্লাবের অদূরে ১২ নম্বর গেটে একটি ট্রলিব্যাগ পাওয়া যায়। ট্রলিব্যাগে মানব শরীরের দুই হাত, দুই পাসহ আটটি খণ্ডাংশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার এসআই আব্দুল কাদির বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।দুই দিন পর ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে নগরীর আকমল আলী সড়কের খালপাড়ে একটি খাল থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় টেপে মোড়ানো শরীরের আরেকটি খণ্ড উদ্ধার করে পিবিআই।
আঙ্গুলের ছাপ ও নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে নিহত ব্যক্তির পরিচয়ও নিশ্চিত হয়ে গ্রেপ্তার করা হয় স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম (৫০) ও বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে (৩২)।তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

২৭ সেপ্টেম্বর আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বাবাকে খুনের বর্ণনা দেন বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান।২০ সেপ্টেম্বর সকালে হাসান ও তার স্ত্রী, বড় ছেলে মোস্তাফিজুর নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী সড়কের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলায় ছোট ছেলে সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীরের বাসায় ছিলেন। সেখানে বাবা ও দুই ভাইয়ের মধ্যে এ নিয়ে ঝগড়া শুরু হয়। এর মধ্যেই বড় ছেলে তার গলা টিপে ধরলে মারা যান হাসান। ঘটনা জানাজানি হওয়ার ভয়ে দুই ভাই মিলে লাশ গুমের উদ্দেশে সেটি কেটে কয়েক টুকরো করে সেগুলো বিভিন্নস্থানে ফেলে দেন।

এদিকে, গত শুক্রবার ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় বাবার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ছোট ছেলে সফিকুর রহমানের স্ত্রী আনারকলিকে। তবে সফিকুর এখনো পলাতক। শনিবার আনারকলিকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের নির্দেশে তিন দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই।

পিবিআই পরিদর্শক ইলিয়াস জানান, আনারকলি সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত নন, তবে আলামত গোপনের সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত উপাদানের যোগানও তিনি দিয়েছেন বলে আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন। তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী আমরা ঘটনাস্থলের পাশের ভবনের পেছনে ময়লার স্তূপ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধামাটি উদ্ধার করেছি। এরপর তার দেখানো মতে আমরা পতেঙ্গায় গিয়ে মাথার খোঁজে তল্লাশি চালিয়েছি। হত্যার পরদিন সকাল ৭টার দিকে আনারকলি ও তার স্বামী পতেঙ্গায় গিয়ে পাথরের ব্লকের ভেতরে মাথাটি ফেলে দেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।আনারকলির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআই পরিদর্শক ইলিয়াস বলেন, লাশ কাটার জন্য ধামা, প্লাস্টিকের ব্যাগ ও কসটেপ কিনে এনেছিল আনারকলি। যে ট্রলিব্যাগে লাশের টুকরো পাওয়া গেছে, সেটাও আনারকলির। কিন্তু সে দাবি করেছে, হাসানকে খুন এবং লাশ কেটে টুকরো করার ঘটনা সে দেখেনি।

এদিকে, আনারকলির স্বামী সফিকুরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে জানিয়েছেন পিবিআই কর্মকর্তা ইলিয়াস।

Facebook Comments Box

Posted ৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩

manchitronews.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক
এ এইচ রাসেল
Contact

5095 Buford Hwy. Atlatna Ga 30340

17709121772

deshtravels7@gmail.com

error: Content is protected !!