
পাবনা প্রতিনিধি | রবিবার, ০৭ জানুয়ারি ২০১৮ | 307 বার পঠিত | প্রিন্ট
পাবনার চাটমোহর উপজেলার আনকুটিয়া গ্রামের দরিদ্র ভ্রান চালক মজনুর রহমানের বড় ছেলে আরিফ হোসেন। পাবনা এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্র সে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে হটাৎ বাবা মজনুর রহমান অসুস্থ হওয়ায় পুরো সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে তার ওপর।
পড়াশোনা বন্ধ হয়ে হওয়ার উপক্রম হয় তার। তখন বাবার ভ্যানের প্যাডেল একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে! কোন কিছু না ভেবে শুরু করে ভ্যান চালানো। পাশাপাশি চালিয়ে যেতে থাকে পড়াশোনা।
ভ্যান চালিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচের পাশাপাশি পরিবারের সবার মুখে অন্নের যোগান দিতে থাকে সে। এসএসসিতে জিপিএ-৫, এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়া আরিফের ভ্যান চালিয়ে যা আয় হয় সেই টাকা সংসারের পেছনেই ব্যয় হয়।
অনেক কষ্টের পর সব বাধাকে দূর করে সব্বোর্চ শিক্ষার দ্বারপ্রান্তে এসে আটকে যায় আরিফ। মাত্র ৬ হাজার ১শ’ টাকার জন্য ফরম ফিলাপ করতে পারে না সে। টাকা জোগাড় করতে না পারায় পড়াশোনা বন্ধের উপক্রম হয় তার।
জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সমাজের বিত্তশালীদের কাছে ধর্ণা দেয় সে। সহযোগিতা না মেলায় অবশেষে উপায়োন্তর না দেখে চাটমোহরের মানবাধিকার কর্মীদের দ্বারস্থ হয় আরিফ।
আরিফের স্বপ্ন পূরণের বাধা কেটে যায় শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায়। মানবাধিকার কমিশন চাটমোহর উপজেলা শাখার সভাপতি কে এম বেলাল হোসেন স্বপন ও অন্যান্য মানবাধিকার কর্মীরা আরিফের হাতে ফরম ফিলাপ ও অনান্য খরচের টাকা তুলে দেন।
আবেগাপ্লুত আরিফ মানবাধিকার কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে এতো দূর এসেছি। মা-বাবা ও ভাই বোনদের মুখে হাঁসি ফোটাতে চেয়েছি। কখনও মনোবল হারাইনি। আল্লাহ্র ওপর বিশ্বাস ছিল। আমি পড়াশোনা শেষ করে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চাই।’
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন চাটমোহর উপজেলা শাখার সভাপতি কে এম বেলাল হোসেন স্বপন বলেন, ‘আরিফকে দিয়েই আমরা শিক্ষাবৃত্তির কার্যক্রম চালু করলাম। প্রকৃত মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে চাটমোহরের মানবাধিকার কর্মীরা সবসময় উৎসাহ দিয়ে যাবে।’
Posted ৫:০১ এএম | রবিবার, ০৭ জানুয়ারি ২০১৮
manchitronews.com | humayun kabir