| শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৩ | প্রিন্ট | 60 বার পঠিত
প্রচলিত রয়েছে, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের দেয়াঙ পাহাড়ের বিশ্বমুড়া নামক স্থানে একসময় আরাকান রাজা রাজ বিক্রমের বাড়ি ছিল। গবেষণায় উঠে এসেছে, পার্শ্ববর্তী উপজেলা আনোয়ারার ঝিওরি, হাজীগাঁও বটতলীসহ কর্ণফুলীর বড়উঠান এবং জুলধা এলাকাজুড়ে সপ্তম-অষ্টম শতকে পণ্ডিত বিহার নামে একটি জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র গড়ে ওঠে। ষোড়শ শতকের দিকে সেটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। ঐতিহাসিক এই স্থানে গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও অনুসন্ধান কাজ শুরু করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক পরিচালক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে চট্টগ্রাম জেলায় এটিই প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক খনন। জানা গেছে, বর্তমানে বগুড়ার মহাস্থানগড় থেকে আসা মোট ১০ জন অভিজ্ঞ শ্রমিক দেয়াঙ পাহাড় খননে কাজ করছেন। কাজ শুরু হওয়ার পর এরই মধ্যে বেরিয়ে এসেছে হাজার বছরের পুরোনো চওড়া ইটের দেয়াল ও ভবনের মেঝে। আভাস পাওয়া যাচ্ছে, আরও কিছু ঐতিহাসিক স্থাপনার।
কথিত আছে, একসময় আরাকান রাজাদের রাজধানী ছিল এ দেয়াঙ। ১৫১৮ সালে পর্তুগিজ বণিকরা চট্টগ্রামে এসে দেয়াঙ পাহাড়ে বসতি স্থাপন করেন। এখানে আরাকানিরা একটি কারাগারও তৈরি করেছিলেন। ধারণা করা হয়, ওই কারাগারেই মধ্যযুগের বিখ্যাত বাঙালি কবি আলাওলকে বন্দি করে রেখেছিল আরাকানিরা। সুলতান গিয়াস উদ্দিন মাহমুদ শাহ সামরিক সাহায্যের বিনিময়ে ১৫৩৭ সালে পর্তুগিজ বণিকদের দেয়াঙ পাহাড়ে কুঠি ও গির্জা নির্মাণের অনুমতি দেন। মোগল আমলে আরাকানি সৈন্যরা ফিরিঙ্গি বন্দর ও ফিরিঙ্গি পল্লির কাছে তিনটি ঘর তৈরি করে। ১৬৬৬ সালের দিকে মোগল সেনারা আরাকানিদের পরাজিত করে দেয়াঙের বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেন। ধারণা করা হয়, তখন এখানকার রাজাদের পতন ঘটে এবং তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
Posted ৭:৪৭ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৩
manchitronews.com | Pabitra talukder